সম্পাদকীয়

জ্ঞানচর্চার সংকট কাটিয়ে ওঠার প্রত্যাশা নিয়ে প্রতিচিন্তার সূচনা হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি ‘তৃতীয় পন্থা বা ‘মধ্যপন্থার’ খোঁজ করা। এটা স্বীকৃত যে নতুন এই পন্থার উপাদানগুলো চিহ্নিত করতে প্রয়োজন ছিল সমষ্টির সাহস, মতবিনিময়, তর্ক-বিতর্ক ও ভিন্নপথ খোঁজা। কিন্তু সে কাজে সমষ্টিকে যে জ্ঞান পাটাতন ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন ছিল তার অনেক অভাব বাংলাদেশে বিদ্যমান। সে রকম একটা জ্ঞান পাটাতন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রতিচিন্তার পথচলা শুরু হয়েছিল। গত পাঁচ বছরে সে প্রত্যাশা পূরণের কত কাছাকাছি প্রতিচিন্তা যেতে পেরেছে তা পাঠকের বিচার্য।

ভিন্নপথ খোঁজার উদ্দেশ্যে ভাববিনিময়, তর্ক-বিতর্ক ও জ্ঞানচর্চার খাতিরে বিদ্যমান লেখকদের সক্রিয় করার পাশাপাশি অনেক নতুন লেখককে উদ্যমী করতে প্রতিচিন্তা সর্বদা সচেষ্ট ছিল। সে চেষ্টায় ভুল হয়তো ছিল, কিন্তু গাফিলতি ছিল না। প্রতিচিন্তাকে নিয়মিত প্রকাশ করা এবং নতুন লেখক তৈরির প্রচেষ্টা থেকে তা বোঝা যায়। এই আত্মমূল্যায়ন সামনে চলার পথকে সমৃদ্ধ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

জ্ঞান পাটাতন সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রয়োজন ছিল দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বাঙালি পাঠক ও লেখকের কাছে প্রতিচিন্তাকে নিয়ে যাওয়া। একটি সক্রিয় ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে সে প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ হয়েছে। নতুন-পুরোনো লেখকদের প্রতিচিন্তায় সক্রিয় করার লক্ষ্যে তাঁদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগই শুধু নয়, তাঁদের মূল্যবান মতামত যাচাই-বাছাইপূর্বক তা গ্রহণে চেষ্টা করেছে প্রতিচিন্তা।

আমরা কথা দিয়েছিলাম বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভিন্নপথ খোঁজার। সেখানে হয়তো দার্শনিক বিমূর্তায়নের বলয় ছিল না, কিন্তু ছিল আজকের বাংলাদেশের বাস্তবতার মূর্তায়ন। দেশীয় ও বৈশ্বিক নতুন নতুন বাস্তবতাকে সামনে রেখে প্রতিচিন্তার এই অবিরাম এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত আছে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ আপেক্ষিক পতন পর্যায়ে থাকার ফলে ক্ষমতার এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে, যা চীন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো উদীয়মান শক্তিগুলো তাদের ক্রমবর্ধমান উত্থান সত্ত্বেও পূরণ করতে এখনো সক্ষম নয়। যার ফলে এই শূন্যতাকে ঘিরে তৈরি হওয়া নতুন নতুন হুমকি এবং তা মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার পরিবর্তে স্বার্থের প্রতিযোগিতাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে বর্তমান বিশ্বে ক্ষমতার কেন্দ্র পরিবর্তনের একটি ঝোঁক বিদ্যমান, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বে বিজয়ী শক্তিগুলোর একরকম চাপিয়ে দেওয়া প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। জাতিসংঘের কাঠামো বিচারে বলা যায়, এর মাধ্যমে সরকারগুলোর স্বার্থসংরক্ষণই শুধু সম্ভব, যা বৈশ্বিক জনস্বার্থের পরিপন্থী। যার ফলে পৃথিবী এবং মানুষের ওপর ক্রমবর্ধমান হুমকিগুলো রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনতা উভয়ই ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা করছে। পৃথিবীব্যাপী মানবাধিকারের ক্রমাগত লঙ্ঘন এবং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ হুমকি মোকাবিলার চেয়ে সরকারগুলোর শুধু ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টার প্রতিফলন।

প্রকৃত হুমকি মোকাবিলায় দেশে দেশে ক্ষমতাসীন সরকারগুলোর উদাসীনতা নগ্নভাবে চোখে পড়ে। যার ফলে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি রাজনৈতিক সচেতনতা থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখা এবং একই সাথে তা বেসরকারি খাতের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি মোকাবিলার মুনাফাসর্বস্ব এক ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে বৈশ্বিক রাজনীতির বিশ্বায়িত জনপরিমণ্ডলে ধর্মের ‘অপ্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তন’ খুব আশ্চর্যজনক কিছু নয়। পশ্চিমে সেক্যুলারিজমের প্রতি ঝোঁক একটি বিপরীত প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এটা শুধু যে অপশ্চিমা দেশ, যেখানে সেক্যুলারিজমকে বিদেশি আরোপণ হিসেবে দেখা হয়, সেখানেই প্রযোজ্য তা নয়। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোতেও অনেক নাগরিক মনে করেন যে সেক্যুলারিজম তাদের চূড়ান্ত মূল্যবোধের ক্ষয়সাধন করে চলেছে, যার ফলে তারা আরও উগ্রবাদী বিশ্বাসে প্রবোধ খুঁজে বেড়াচ্ছে। আর এই সুযোগে দেশে দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ধর্মোন্মত্ততাকে তাদের বক্তৃতা এবং অনেক সময় কাজেও অপব্যবহার করছে। যার ফলে আজকের বিশ্ব সেক্যুলার-ধার্মিক পরিচয়ে বিভাজিত হওয়ার হুমকিতে পড়েছে। এটা স্বীকার করতেই হবে যে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এই অবস্থাকে আরও শোচনীয় করেছে।

বৈশ্বিক এসব পরিবর্তন ও ঘটনা থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন নয়। এর প্রায় সবগুলো বিষয়ই বাংলাদেশকে শুধু প্রভাবিতই করছে না, বরং এখানেও বিদ্যমান। সার্বিক এই চিত্রটিকে সামনে রেখে সঠিক নীতি অবস্থান গ্রহণ সময়ের দাবি। এর জন্য প্রয়োজন জ্ঞানচর্চার এক সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে যুক্তি দিয়ে জাতীয় স্বার্থ ও বৈশ্বিক মানবতাবোধকে সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট এক নতুন জনপরিমণ্ডল সৃষ্টি হবে। প্রতিচিন্তা সে লক্ষ্যে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। আগামী দিনে প্রতিচিন্তার লক্ষ্য পরিবর্তিত জাতীয় ও বৈশ্বিক বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম এক জনপরিমণ্ডল তৈরি করা। জ্ঞানচর্চা ও চর্চিত জ্ঞান সঠিকভাবে প্রয়োগই আমাদের মুক্তির পথ। প্রতিচিন্তা আগামীর বাংলাদেশের জন্য জ্ঞানচর্চার এক পাটাতন হিসেবে কাজ করতে সচেষ্ট।

২.

বিশ্বায়ন এখন শুধু একটি ধারণা নয়, বরং এটি আমাদের নিত্যদিনের বাস্তবতার অংশ। একই সময়ে নানা বিতর্ক ও বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্বায়ন-প্রক্রিয়া। সমালোচকদের মতে, মানুষের সক্ষমতা ও স্বাধীনতা বৃদ্ধির পরিবর্তে বিশ্বায়ন মানুষকে নতুন নতুন বাধার মুখোমুখি করছে। এসব বাধা এবং সেখান থেকে উত্তরণের পথগুলোর তাত্ত্বিক আলোচনা করেছেন হায়দার আলী খান। তাঁর প্রবন্ধের শিরোনাম ‘একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার’। লেখকের মতে, বিশ্বায়নের বর্তমান চিড় ধরা প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত একটি চিড় ধরা আঞ্চলিকতাবাদ বা জাতীয় সংরক্ষণবাদ এবং দ্বন্দ্বে পর্যবসিত হতে পারে। এই অবস্থায় বাণিজ্য, আর্থিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পরিবেশগত, নারী এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শাসনব্যবস্থা তৈরির বিষয়টি বৈশ্বিক, জাতীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক আলোচ্যসূচিতে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

অন্যদিকে, বিশ্বায়নের এই যুগে অর্থনৈতিক জোরই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যেকোনো রাষ্ট্রের অবস্থান নির্ধারণ করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির মূল আদর্শ হিসেবে গোটা দুনিয়ায় এখন নব্য উদারনীতিবাদের রমরমা অবস্থা। তবে নব্য উদারনীতিবাদের লাগামহীন ব্যবহারের ফলে বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে নানা অর্থনৈতিক বিপর্যয়। নব্য উদারনীতিবাদের এসব ত্রুটি এবং তা থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাব্য পথগুলো জেসন হিকেল আলোচনা করেছেন ‘নব্য উদারনীতিবাদের ত্রুটিগুলো কীভাবে সারাই করা সম্ভব’ শীর্ষক প্রবন্ধে। নব্য উদারনীতিবাদ-সংক্রান্ত চলমান আলোচনা ও বিতর্কে এটি রসদ জোগাবে বলে আমাদের ধারণা।

সর্বজনীন শাসনব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্র এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে রাষ্ট্রপরিচালনার পদ্ধতি হিসেবে গণতন্ত্র সব দেশে একই মাত্রায় সফল হয়নি। উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের কিছু দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেলেও, অধিকাংশ উন্নয়নশীল ও দরিদ্র রাষ্ট্রে গণতন্ত্র এখনো কাগজে-কলমেই টিকে আছে। এসব রাষ্ট্রে গণতন্ত্র কেন টেকসই হচ্ছে না, তার বিশ্লেষণ করেছেন বদরুল আলম খান। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিচিন্তার এই সংখ্যায় ছাপা হলো ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র: এলিট বনাম জনগণ’ শিরোনামের প্রবন্ধটি। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে রাষ্ট্রের এলিট শ্রেণি ও সাধারণ জনগণের মধ্যকার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও দ্বন্দ্বের তাত্ত্বিক আলোচনা করেছেন লেখক। লেখকের মতে, এলিট শ্রেণি স্বেচ্ছায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসে না, জনগণকেই গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করে নিতে হয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তি বা দলীয় নেতৃত্বের প্রচেষ্টা ও সফলতা আশাব্যঞ্জক নয়। ফলে এই ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের বড় মাপের সংস্কার প্রয়োজন।  

স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে প্রথম রচিত সংবিধানে সেক্যুলারিজমকে রাষ্ট্রপরিচালনার অন্যতম মূল ভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। একই সময় ধর্মভিত্তিক সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান সংবিধান থেকে সেক্যুলারিজমের নীতি বাদ দেন এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ‘ইসলাম’কে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১১ সালে সেক্যুলারিজমকে পুনরায় রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে ফিরিয়ে আনা হয়। এই পুরোটা সময় ধরেই সেক্যুলারিজম বাংলাদেশে একটি অন্যতম আলোচিত বিষয়। অন্যদিকে, ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামিক বিপ্লব, ১৯৯০-এর দশকের প্রথম দিকে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতন এবং বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় ও ডানপন্থী দলগুলোর উত্থানের ফলে সেক্যুলারিজম নতুন মাত্রায় আলোচনার মঞ্চে হাজির হয়। এই বিষয়টি সামনে রেখে প্রতিচিন্তার এই সংখ্যায় ‘সেক্যুলারিজমের রূপ ও রূপান্তর’ শিরোনামের প্রবন্ধটি ছাপা হলো। প্রবন্ধটি লিখেছেন আলী রীয়াজ। এই প্রবন্ধে লেখক সেক্যুলারিজম ধারণাটির বিভিন্নমুখী দৃষ্টিভঙ্গির একটি তুলনামূলক আলোচনা হাজির করেছেন, যা আমাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সেক্যুলারিজম ধারণাটিকে তুলনামূলকভাবে বুঝতে এবং এর বৈচিত্র্য ও বিশিষ্টতা অনুধাবনে সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করি।  

অজয় রায়, বাংলাদেশে বাম ধারার রাজনীতির একজন সক্রিয় নেতা। আজীবন আপসহীন একজন রাজনৈতিক কর্মী। আপাদমস্তক রাজনীতিক এই মানুষটি নানা রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে কাটিয়েছেন প্রায় ১৫ বছর। তারপরও রাজনীতির মাঠ থেকে পিছিয়ে আসেননি। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের স্বপ্নে বিভোর থাকা এই রাজনীতিবিদ এখনো মার্ক্সবাদে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। তাঁর সঙ্গে আলাপ করেছেন মতিউর রহমান। এই আলাপচারিতায় উঠে এসেছে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি, ষাটের দশকের আন্দোলন-সংগ্রাম, বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামসহ পরবর্তী পরিস্থিতি। মার্ক্সবাদের বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা ও ভবিষ্যত্ নিয়েও কথা বলেছেন অজয় রায়।

চলচ্চিত্র সংস্কৃতির এক শক্তিশালী মাধ্যম। চলচ্চিত্র পশ্চিমা আবিষ্কার হলেও, খুব দ্রুতই চলচ্চিত্র দক্ষিণ এশীয় জনপরিসরে জায়গা করে নেয়। ভিনদেশি সংস্কৃতির একটি মাধ্যম কীভাবে দেশীয় অন্যান্য বিনোদন মাধ্যমের সংস্পর্শে এসে পরিবর্তিত হয়েছিল এবং গণমানুষের রুচি এবং রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষায় পরিবর্তন সাধন করেছিল তা অনুধাবন জরুরি। তাই এই সংখ্যায় ‘বিশ শতকের প্রথমার্ধে দক্ষিণ এশিয়ায় চলচ্চিত্রের দেশীয়করণ: আন্তদেশীয় থেকে স্বদেশীয় জনপরিসর’ শিরোনামে সংস্কৃতি অধ্যয়নের এই প্রবন্ধটি ছাপা হলো, লিখেছেন জাকির হোসেন রাজু। বিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলাদেশে বৃহত্তর সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিসরে, উত্পাদন থেকে গ্রহণ পর্যায়ে, চলচ্চিত্র কীভাবে এ দেশের হয়ে উঠেছে, তা এই প্রবন্ধে আলোচিত হয়েছে।

৯/১১ হামলার পর থেকেই জঙ্গিবাদ বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত বিষয়। একটা সময় পর্যন্ত আল-কায়েদাকে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী হুমকি হিসেবে দেখা হলেও, ২০১৪ সালের প্রথম থেকে ইসলামিক স্টেট বা আইএস সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। অন্যদিকে, ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী সংগঠনগুলো আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করে। আইএসের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশকে আইএসের সম্ভাব্য টার্গেট হিসেবে বিবেচনা করা শুরু করেন। বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ হয় গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার পর। এরপরই হামলা হয় ৭ জুলাই ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। এই পরিস্থিতিতে আইএসের উত্থান, আদর্শ, কৌশল এখন জাতীয় আলোচনার বিষয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিচিন্তার এই সংখ্যায় বই আলোচনা অংশে ছাপা হলো প্যাট্রিক ককবার্নের বহুল আলোচিত বই দ্য রাইজ অব ইসলামিক স্টেট: আইসিস অ্যান্ড দ্য নিউ সুন্নি রেভল্যুশন-এর আলোচনা। এর মাধ্যমে পাঠক আইএস সম্পর্কে আরও বিশদ জানতে পারবেন। বই আলোচনাটি করেন আইরিন খান।